প্রতিদিন নতু্ন নতুন বাড়ির নকশার ছবি সাথে খরচ সহ পোস্ট করা হয়। কেন বিল্ডিং এর দেয়ালে নোনা ধরে? - House Design

কেন বিল্ডিং এর দেয়ালে নোনা ধরে?

 প্রতি বর্ষাতেই অনেক বাড়িওয়ালা অভিযোগ জানান যে, তাদের বাড়ির দেয়ালে নোনা ধরছে, প্লাস্টার খসে পড়ছে কিংবা দেয়াল ফুলে রং উঠে যাচ্ছে। এরকম কেন হয় এবং এর সমাধান কি? এটা নিয়েই আজকের আলোচনা। 



প্রথমেই আসি, কেন বিল্ডিং এর দেয়ালে নোনা ধরে? 

সাধারণতঃ মাটিতে বা নির্মাণ সামগ্রীতে বিভিন্ন লবন সমূহ যেমন-সোডিয়াম সালফেট, ক্যালসিয়াম কার্বনেট, ক্যালসিয়াম সালফেট, সোডিয়াম কার্বনেট, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ইত্যাদির উপস্থিতি থাকলে নোনা সৃষ্টি হয়ে থাকে। এছাড়াও আরও কিছু কারনে নোনা সৃষ্টি হয়ে থাকে। 

যেমন- 

* মেঝে ও দেয়ালে সঠিক ভাবে সিক্ততা নিরোধক স্তর না বসানোর ফলে। 

* সুষ্ঠ পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে। 

* পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের সুযোগ না থাকলে।

* গাঠনিক ত্রুটিজনিত কারনে। 

* বাড়ী তৈরীর সময় স্বল্প পোড়ানো ইট ব্যবহৃত হলে। 

* বাড়ী তৈরীর উপকরণ যেমন- ইট, বালি,সিমেন্ট, পানি প্রভৃতির মধ্যে লবনের পরিমান ২.৫% এর বেশী হওয়ার কারনে। 

* প্লাষ্টারের নিচে পানির লাইনের অবস্থান হলে। 

* দেয়ালের যে সব অংশে রোদ কম পড়ে সেসব জায়গা অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকায় বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বিন্দু বিন্দু পানিরূপে দেয়ালে জমা হতে থাকে এবং প্লাষ্টার বা ইটের অভ্যন্তরে যে সব লবন থাকে তা দ্রবীভূত করে নোনা ধরায় সাহায্য করে। 


অনেক সময় বাড়ির ছাদে ফাটল ধরে পানি চুঁইয়ে ঘরের ভিতরে ছাদের অংশে বা দেয়ালে ড্যাম্প ধরে। এ ক্ষেত্রে দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে ছাদের ওই ফাটল মেরামত করা জরুরি। ঘরের দেয়ালে পানি চুঁইয়ে পড়ার কারণ খুঁজে বের করতে হবে আর যত দ্রুত সম্ভব সেই সমস্যার সমাধান করতে হবে।


সাধারণত ছাদে বাগান থাকলে বা কোনো কারণে পানি জমলে ছাদের সরাসরি নিচের ফ্লোর এবং শুধু একতলা ও দোতলার দেয়ালগুলো স্যাঁতসেঁতে হয়৷ মাঝখানের ফ্ল্যাটগুলোর দেয়াল আবার স্বাভাবিক থাকে৷ এর কারণ হলো পানির উৎসটা সব সময় নিচের দিকে নেমে আসে৷ বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে পানি দেয়ালের ভেতর দিয়ে এসে নিচতলা বা দোতলার দেয়ালগুলো স্যাঁতসেঁতে করে তোলে৷ এ জন্য যেসব বাড়ির ছাদে স্থায়ী বাগান আছে, তারা প্রথম বা দ্বিতীয় তলায় ড্যাম প্রুফিং কেমিক্যাল লাগাতে পারেন৷ এটি বাজারে এখন বেশ সহজলভ্য।


বাইরের দেয়ালকে ঝড়-বৃষ্টি মোকাবিলা করতে হয়। তাই বাইরের দেয়ালে ব্যবহার করুন অ্যাক্রেলিক ইমালশন। দেয়ালের জন্য সাধারণত ডিসটেম্পার ও প্লাস্টিক পেইন্ট এই দুই ধরনের রং ব্যবহার করা যায়।  সাধারণত পুরনো বাড়ির ক্ষেত্রে বাইরের দেয়াল তিন বছর পর পর রং করা উচিত। ভেতরের দেয়ালের রং সাধারণত পাঁচ বছর পর্যন্ত উজ্জ্বল থাকে। দেয়ালের রং খুব ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে সিলার ব্যবহার করতে পারেন। এতে দেয়াল যেমন নোনা ধরা থেকে বাঁচবে, তেমনি  মসৃণ ও রং দীর্ঘদিন ভালো থাকবে। 

ধন্যবাদ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.